ক্রেডিট কার্ড বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ব্যাবহুত একটি ব্যাংকিং ব্যবস্থা। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আপনার একাউন্টে যদি কোনো টাকা না থাকে তবে ও আপনি ইন্সট্যান্ট লোন নিয়ে কার্ড দিয়ে টাকা পরিশোধ করতে পারবেন।
বিষয়টা অনেকটা লোন এর মতো বলা যায়। ধরুন – আপনি কোনো দোকান থেকে কিছু একটা ক্রয় করবেন ক্রেডিট কার্ড দিয়ে। এখন, আপনার কার্ডে কোনো প্রকার টাকা নেই। কিন্তু আপনার কার্ডে টাকা লোড করা ছাড়াই আপনি পন্য টি ক্রয় করতে পারবেন।
সমান পরিমান টাকা ও নির্ধারিত ফি পরবর্তী তে আপনার একাউন্ট থেকে কেটে নেয়া হবে। বন্ধুরা, আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো – ক্রেডিট কার্ড কি, ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা কি, ক্রেডিট কি কি কাজে লাগে, ক্রেডিট কার্ড হারাম নাকি হালাল ইত্যাদি।
আপনি যদি ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে কিছুই না জেনে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেল টি শেষ পর্যন্ত পড়লে ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে খুটি নাটি সব বিষয় গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ক্রেডিট কার্ড কি
ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পূর্বে আমাদের এটা জানা দরকার ক্রেডিট কার্ড আসলে কি। ক্রেডিট কার্ড হলো টাকা পরিশোধ করার একটি ব্যাংকিং ডিজিটাল ব্যাবস্থা। যেটা দিয়ে আপনি যে কোনো কিছুর মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন।
ক্রেডিট সাধারণত কোনো কিছু ক্রয়ের পর মূলত পরিশোধ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। আন্তর্জাতিক ভাবে যে কোনো কিছুর মূল্য পরিশোধ করতে চাইলে আপনার একটি ক্রেডিট কার্ড থাকলে কোনো অসুবিধা হবে না।
ডেবিড কার্ড কি ও কি ভাবে পাবেন | ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে পার্থক্য
অন্যান্য যে কোনো কার্ডের ক্ষেত্রে আপনাকে মাসিক অথবা বছরে একটা নির্দিষ্ট পরিমান ফি সাথে আপনাকে প্রথমে কার্ডে টাকা লোড করার পরেই আপনি লোড এর পরিমান টাকা ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে আপনার লোড করা টাকা যদি না ও থাকে তাহলে ও আপনি মন মতো খরচ করতে পারবেন।
ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার
ক্রেডিট কার্ড অনেক ধরণের হয়ে থাকে। ধরণ অনুযায়ী ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা দেখা যায়। আপনি যখন নতুন একটি ক্রেডিট কার্ড করতে যাবেন তখন যে কোনো একটি ক্যাটাগেরি এর কার্ড নিতে পারবেন। তাই কার্ড নেয়ার পূর্বেই জেনে নিন ক্রেডিট কার্ড এর প্রকারভেদ গুলো –
- লো ইনকাম ক্রেডিট কার্ড
- রিওয়ার্ডস ক্রেডিট কার্ড
- ক্যাশব্যাক ক্রেডিট কার্ড
- ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড
- সিক্যুরড ক্রেডিট কার্ড
- শপিং ক্রেডিট কার্ড
এবার এসকল কার্ড সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যাক –
১ – লো ইনকাম ক্রেডিট কার্ড
আমরা যারা মাসে অনেক বেশি আয় করতে পারি না তাদের জন্য এক ধরণের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। যদি ইনকামের পরিমান ৩০ হাজার টাকার নিচে হয় তবে লো ইনকাম ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন।
যাদের ইনকাম এর পরিমান কম থাকে সাধারণত তাদের জন্য ক্রেডিট কার্ড পাওয়া অনেক বেশি কস্টসাধ্য ব্যাপার। লো ইনকাম ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে অনেক ধরণের নিয়ম ও লিমিটেসন থাকে। এই কার্ড দিয়ে আপনি যত ইচ্ছা পেমেন্ট করতে পারবেন না। [ ক্রেডিট কার্ড কি ]
যদি আপনি লো ইনকাম ক্রেডিট কার্ড নিতে চান তাহলে সকল শর্ত মেনে নিয়ে আপনাকে কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনাকে কি কি শর্ত দিবে এটা একান্তই ক্রেডিট কার্ড বিতরনকারী কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিবেন।
২ – রিওয়ার্ডস ক্রেডিট কার্ড
ক্রেডিট কার্ড এর ধরণ গুলোর মধ্যে এটি ও একটি ধরণ। এই কার্ডের অনেক সুবিধা আছে। যদি আপনি প্রতি মাসে অনেক বেশি টাকা ব্যয় করেন তবে আপনাকে বিভিন্ন ধরণের রিওয়ার্ড প্রদান করবে।
এই ধরণের কার্ড গুলো তে আপনার মাসিক ব্যয় কত হবে কার্ডের মাধ্যমে এটা বেশি প্রধান্য দেয়া হবে। বিভিন্ন পরিমান পেমেন্ট এর জন্য নির্দিষ্ট ভাবে আপনাকে অফার, ও রিওয়ার্ডস দিবে।
৩ – ক্যাশব্যাক ক্রেডিট কার্ড
ক্যাশব্যাক ক্রেডিট কার্ড ও এক ধরণের ক্রেডিট কার্ড। এই কার্ড গুলো পাওয়ার জন্য আপনাকে নির্ধারিত সকল শর্ত গুলো পূরণ করতে হবে। এই কার্ড গুলো দিয়ে প্রতি মাসে আপনি যদি নির্দিষ্ট পরিমান পেমেন্ট করেন তাহলে আপনাকে ক্যাশব্যাক অফার প্রদান করবে।
আমরা বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে যে ধরণের ক্যাশ ব্যাক অফার গুলো দেখে থাকি ক্রেডিট কার্ডের বেলায় বিষয় টা অনেক টা একি রকম হবে।
৩ – ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড
ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আপনি বিশ্বের যে কোনো দেশে ইন্সট্যান্ট পেমেন্টের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। আপনি যদি একজন ট্রাভেলার হয়ে থাকেন ও বিভিন্ন দেশে ভ্রমন করেন তাহলে আপনার জন্য ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড সবচেতে সুবিধাজনক কার্ড হবে।
এছাড়াও ট্রাভেলিং এর ক্ষেত্রে বিমান বুকিং দেয়ার জন্য যত টাকা প্রয়োজন সকল টাকা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে সম্পন্ন করার সুবিধা পাওয়া যায়। এই কার্ডের জন্য আপনি যে একজন ভ্রমন প্রেমি তার সকল বিস্তারিত তথ্য ও শর্ত অনুযায়ী কার্ডের আবেদন করতে পারবেন। [ ক্রেডিট কার্ড কি ]
৪ – সিক্যুরড ক্রেডিট কার্ড
এ ধরণের কার্ড গুলো তে আপনাকে খরচ এর পূর্বে টাকা লোড করে রাখতে হবে। এর পরে যদি অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়ে যায় তবে পূর্বের লোড করা টাকা থেকে সমন্বয় করা হবে।
৫ – শপিং ক্রেডিট কার্ড
আপনি যদি অনলাইনে অথবা অফলাইনে যে কোনো মার্কেটপ্লেস থেকে শপিং করতে যান তাহলে এই কার্ড গুলো আপনাকে বাড়তি সুবিধা প্রদান করবে। শপিং ক্রেডিট কার্ড এর মাধ্যমে যদি শর্ত সাপেক্ষে আপনি আনলিমিটেড শপিং করার পারমিশন পান তাহলে ক্রেডিট স্কোর নিয়ে আপনার চিন্তা করতে হবে না। [ ক্রেডিট কার্ড কি ]
বিভিন্ন শপিং মল গুলো তে নির্দিষ্ট পরিমান ছাড় অফার করে। শপিং ক্রেডিট কার্ড এর মাধ্যমে আপনি এই ধরণের অফার গুলো নিতে পারবেন।
এ ছাড়াও অনেক ধরণের ক্রেডিট কার্ড পাওয়া যায়। আপনি যখন ক্রেডিট কার্ড নিবেন তখন প্রয়োজন অনুযায়ী আপনার পছন্দ মতো যে কোনো এক ধরণের ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন।
ক্রেডিট কার্ড কি কি কাজে লাগে
ক্রেডিট কার্ড দিয়ে আপনি অনেক ধরণের কাজ গুলো করতে পারবেন। সাধারণত যে সব কাজে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় ক্রেডিট কার্ড –
পেমেন্ট প্রদান
আপনি অনলাইনে অথবা হোক অফলাইনে পেমেন্ট এর জন্য ক্রেডিট কার্ড অন্যতম। ক্রেডিট কার্ড এর মাধ্যমে যে কোনো দেশে খুব সহজে পেমেন্ট করা যায়।
লোন নেয়া
ক্রেডিট কার্ড এর মাধ্যমে আপনি ইন্সট্যান্ট লোন নিতে পারবেন। যে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে লোন নেয়ার জন্য অনেক গুলো কাজ সম্পন্ন করে আবেদন করতে হয়। এরপরে আবেদন গ্রহণ হলে লোন পাওয়া যায়। তবে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আপনি ১ সেকেন্ড এর মধ্যেই লোন নিতে পারবেন। [ ক্রেডিট কার্ড কি ]
অফার / ক্যাশব্যাক এর ক্ষেত্রে
আপনি যদি একজন শপিং প্রিয় মানুষ হোন। দেশের বাহিরে প্রচুর পরিমানে যদি পেমেন্ট করতে হয় তাহলে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অফার দিয়ে থাকে তাছাড়া আপনি নির্দিষ্ট পরিমান ক্রেডিট স্কোর করলে ক্যাশব্যাক বা রিওয়ার্ড ও পেয়ে যাবেন।
ব্যালেন্স ট্রান্সফার
খুব কম সময়ের মধ্যে যে কোনো স্থানে আপনি ব্যালেন্স ট্রান্সফার করতে পারবেন। শুধু মাত্র ক্রেডিট কার্ড দিয়েই এই সুবিধা পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে আপনার একাউন্টে ব্যালেন্স না থাকলেও লোন নিয়ে পাঠাতে পারবেন। [ ক্রেডিট কার্ড কি ]
এ ছাড়াও অনেক ধরণের কাজে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা হয়। আপনি যে কাজে ব্যবহার করবেন সেটার জন্য আলাদা ধরণ অনুযায়ী ক্রেডিট কার্ড নেয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুটা নিয়ম মেনে চলা উচিৎ। যদি আপনার ক্রেডিট স্কোর কমতে থাকে তাহলে ফি এর পরিমান ও বাড়তে থাকবে। নিচে আমরা কয়েকটি দিক নির্দেশনা দিলাম ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার এর নিয়ম সম্পর্কে –
- সবসময় নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই আপনার ক্রেডিট কার্ডের বিল সম্পন্ন করে দিন। যদি আপনি নির্ধারিত সময়ের পরে বিল প্রদান করবন তাহলে অতিরিক্ত ফি দিতে হবে।
- আপনি যে পরিমান টাকা আয় করেন সেটা অনুযায়ী পরিকল্পনা করে নিন যে কত টাকা খরচ করলে সেটা পরিশোধ করতে পারবেন। যদি অতিরিক্ত পরিমান খরচ করে ফেলেন তবে ঋন বাড়তে থাকবে।
- আপনি কোথায় কত টাকা ব্যয় করছেন সেটার ফি কত হচ্ছে এগুলো চেক করে রাখুন সবসময়।
- ক্রেডিট কার্ড এর ধরণ অনুযায়ী আপনাকে যে সকল শর্ত গুলো দেয়া হয়েছিল সেগুলো আপনাকে মেনে চলতে হবে নয়ত জরিমানা দিতে হবে।
এ ছাড়াও আপনি যদি শর্ত অনুযায়ী সব বিষয় গুলো মাথায় রেখে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলে আপনার অতিরিক্ত ফি বা জরিমানা দিতে হবে না।
ক্রেডিট কার্ড বানাতে কি কি লাগে
ক্রেডিট কার্ড সাধারণত ব্যাংকের মাধ্যমে প্রদান করা হয়। কিন্তু আপনি চাইলেই ক্রেডিট পাবেন না। এর জন্য আপনাকে শর্ত মেনে নিতে হবে, যদি আপনি ক্রেডিট পাওয়ার যোগ্য হোন তবেই আপনি ক্রেডিট কার্ড পাবেন।
ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য আপনাকে আর্থিক ভাবে সচ্ছল থাকতে হবে। ব্যাংকে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা জমা করতে হবে। এ ছাড়াও যে সকল বিষয় লাগবে সেগুলো হলো –
- আপনার একটি ব্যাংক একাউন্ট ও ব্যাংকে ভালো পরিমান টাকা জমা রাখা।
- মাসিক ভালো পরিমান আয়ের প্রমান পত্র।
- জাতীয় পরিচয় পত্র।
- পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি।
- পুরনো ব্যাংকের লেনদেন এর কপি।
- নমিনির সকল তথ্য।
এগুলো ব্যাংকে জমা দিয়ে আবেদন করার পরে আপনি যোগ্য হলে আপনাকে ক্রেডিট কার্ড দিতে দেয়া হবে। [ ক্রেডিট কার্ড কি ]
এ ছাড়াও পেশা অনুযায়ী কিছু শর্ত রয়েছে। ব্যাবসায়ীদের ক্ষেত্রে মাসিক ১০ লাখ টাকা লেনদেন হলে তারা ক্রেডিট কার্ড পাবেন। আর চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ৩০-৫০ হাজার টাকা বেতন হলে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা
ক্রেডিট কার্ডের যেমন বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। তেমনি কিছু অসুবিধাও আছে। কার্ডে নেওয়া এবং ব্যবহার করার আগে এগুলো অবশ্যই আপনার জানা উচিত। নিম্নে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা
ক্রেডিট ব্যবহারের অনেক সুবিধা আছে। আপনি বৈধ যে কোনো অনলাইন প্লাটফর্ম গুলোতে পেমেন্ট দেয়া থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা লক্ষ করা যায় যার মধ্যে কয়েকটি হলো –
দ্রুত লেনদেন
অন্যান্য যে কোনো ব্যাংকিং সেবার চেয়েও দ্রুত সময়ের মধ্যে লেনদেন করতে পারবেন ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে।
রিওয়ার্ডস সুবিধা
আপনি পেমেন্ট এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের রিওয়ার্ডস পাবেন। যেগুলো দিয়ে আপনি পরবর্তী সময়ে অনেক কিছু ক্রয় করতে পারবেন। ধরুন – আপনাকে অফার দেয়া হলো ২০০ টাকা পেমেন্টে ৪০ টাকা ক্যাশব্যাক। সে ক্ষেত্রে আপনি পেমেন্ট করে এই সুবিধা টি ভোগ করতে পারবেন।
সুরক্ষা
সাধারণত আমরা মানিব্যাগ অথবা পকেটে টাকা নিয়ে কোথাও কিছু ক্রয় করতে যাই। এ সব ক্ষেত্রে ছিনতাই হওয়ার অনেক বেশি ঝুকি থেকে যায়। নগদ অর্থ বহন এর ঝুকি এড়াতে সুরক্ষা দেয় ক্রেডিট কার্ড।
লোন সুবিধা
আপনি সঠিক নিয়মে যদি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন তাহলে ক্রেডিট স্কোর পেতে থাকবেন। আপনার ক্রেডিট এর স্কোর ভালো থাকলে আপনি লোন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
গ্রেস পিরিয়ড
বিভিন্ন ধরণের কার্ড গুলোতে মাসিক একটা গ্রেস পিরিয়ড দেয়। যে খানে ০% ইন্ট্রেস্টে লোন প্রদান করে। তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ভালো ভাবে কার্ড স্কোর ম্যানেজ করতে হবে। [ ক্রেডিট কার্ড কি ]
এ ছাড়াও সকল কাজের ও ব্যবহার এর ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা প্রদান করে ক্রেডিট কার্ড। কত সুবিধা পাবেন এটা অবশ্যই নির্ভর করে ক্রেডিট কার্ডের ধরণ এর উপর ভিত্তি করে।
ক্রেডিট কার্ডের অসুবিধা
ক্রেডিট কার্ডের যেমন সুবিধার দিক রয়েছে ঠিক একই ভাবে অসুবিধার ও অনেক দিক রয়েছে। যদি অসুবিধার দিক সম্পর্কে না জানেন তাহলে জেনে নিন নিচে থেকে –
ঋন বাড়ে
ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে আপনার কাছে টাকা না থাকলেও পেমেন্ট হয়ে যায়। এখানে, পরবর্তী তে আপনাকে পেমেন্ট এর টাকার সাথে অতিরিক্ত ফি প্রদান ও করতে হয়। আবার নির্ধারিত সময়ের পূর্বে যদি দিতে না পারেন তাহলে জরিমানা করা হয়। তাই বলা যায় যে, ঋন বেড়ে যায় খুব সহজে।
অতিরিক্ত ইন্ট্রেস্ট
অন্যান্য যে কোনো লোনের তুলনায় ক্রেডিট কার্ডের ইন্ট্রেস্ট রেট অনেক বেশি। তাই আপনার যদি অনেক বেশি টাকা আয় না থাকে তাহলে ঋন এর মধ্যে তলিয়ে যেতে সময় লাগবে না।
ক্রেডিট স্কোর
যদি আপনি ভালোভাবে আপনার কার্ড টি ব্যবহার করতে না পারেন তাহলে ক্রেডিট স্কোর কমে গেলে আপনার ফি এর পরিমান বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে।
মাসিক/ বছরে ফি
প্রতি মাসে কার্ড টি সচল রাখার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমান ফি প্রদান করতে হবে। যদি আপনি ফি না দিতে ব্যার্থ হোন কার্ড টি ডিএক্টিভ হয়ে যাবে।
ক্রেডিট কার্ড হারাম না হালাল?
অনেক বড় বড় ইসলামিক স্কলার এর মতে ক্রেডিট কার্ড হারাম। কারণ আপনি খাতা কলমে সাক্ষর দিয়ে ইন্ট্রেস্ট দিচ্ছেন। আর ইসলামিক ক্ষেত্রে টাকা দিয়ে টাকা বাড়ানো কে সুদ হিসেবে ধরা হয়। তাই বলা যায় যে, ক্রেডিট কার্ড হারাম তবে আপনি যদি লোন বা ইন্ট্রেস্ট দেয়া/নেয়া ছাড়া ব্যবহার করেন তাহলে করতে পারেন। [ ক্রেডিট কার্ড কি ]
ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে পার্থক্য
ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড কে আমরা অনেকেই একইরকম ভেবে থাকি। তবে দুটোর মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। যেগুলো আমরা নিচে দিয়ে দিচ্ছি –
ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে পার্থক্য — ১
ক্রেডিট কার্ড দিয়ে আপনি লোন নিয়ে যে কোনো ভাবে খরচ করতে পারবেন তবে ডেবিট কার্ড আপনার ব্যাংক একাউন্টের সাথে কানেক্ট থাকবে। আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা শেষ হলে আর ডেবিট কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন না।
ডেবিট কার্ড ও কার্ডের মধ্যে পার্থক্য — ২
ক্রেডিট কার্ড দিয়ে আপনি বিভিন্ন রিওয়ার্ড পাবেন। আপনাকে পেমেন্ট এর উপর আলাদা ক্রেডিট দিতে হবে। ডেবিট কার্ডে এ ধরণের সুবিধা নেই।
ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে পার্থক্য — ৩
ক্রেডিট কার্ড দিয়ে যদি আপনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সকল ব্যালেন্স পেমেন্ট না করতে পারবন তাহলে আপনাকে ফি প্রদান করতে হবে। ডেবিট কার্ডের ক্ষেত্রে আপনাকে কোনো ফি দিতে হবে না। [ ক্রেডিট কার্ড কি ]
ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে পার্থক্য — ৪
সিকিউরিটি এর দিক থেকে আপনার সেভিংস একাউন্টে ক্রেডিট কার্ড যুক্ত না থাকার কারনে আপনার সেভিংস একাউন্ট এর টাকা যাবেনা কিন্তু ডেবিট কার্ডে সরাসরি ব্যাংক এর লিংক থাকে তাই সিকিউরিটি এর দিক থেকে ক্রেডিট কার্ড সুবিধাজনক।
ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে পার্থক্য — ৫
ক্রেডিট কার্ডের ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন ক্ষেত্রে আপনাকে বাড়তি সুবিধা প্রদান করবে। কিন্তু ডেবিট কার্ডে এরকম কোনো বাড়তি সুবিধার কোনো দিক নেই।
এ ছাড়াও অনেক ধরণের পার্থক্য আছে ক্রেডিট কার্ড ও ডেবিট কার্ড এর মধ্যে। ডেবিট কার্ড নিয়ে বিস্তারিত জানতে নিচের এই আর্টিকেল টি পড়তে পারেন।
ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে আমার মন্তব্য
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা অনেক রিস্ক হবে যদি আপনি ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে ভালো ভাবে না বুঝেন। আপনি খরচ না করলেও আপনার ঋন হয়ে যাওয়ার ঝুকি থেকেই যাবে। তাই যদি আপনি ক্রেডিট কার্ড বানাতে চান তবে ব্যাংকের সাথে খুব ভালোভাবে শর্ত গুলো জেনে নিবেন। আর্টিকেল টি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নউত্তর
18 বছর বয়সে কি ক্রেডিট কার্ড নেওয়া উচিত
18 বছর বয়সে, একটি ক্রেডিট কার্ড পাওয়া সম্ভব হতে পারে, তবে এটি আপনার যোগ্যতা এবং আর্থিক অবস্থার উপর নির্ভর করে। তবে বর্তমানে ব্যাংকের অতিরিক্ত ডকুমেন্টেশনের প্রয়োজন হতে পারে। যেমন একটি স্বাক্ষরিত আইডি, আয়ের প্রমাণ ইত্যাদি। অল্প বয়সে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার আপনার আর্থিক সম্ভাবনার উন্নতি করতে পারে। তবে এটি অবশ্যই সতর্কতার সাথে পরিচালনা করতে হবে।
আমি কি আমার ক্রেডিট কার্ড সম্পূর্ণ পরিশোধ করব নাকি একটি ছোট ব্যালেন্স রেখে দেব
আপনি যখন সুযোগ পাবেন, চেষ্টা করবেন আপনার ক্রেডিট কার্ড ব্যালেন্স পূর্ণভাবে পরিশোধ করা। মাসিক ক্রেডিট কার্ডের ব্যালেন্স সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারলে আপনার সুদের ব্যয়ে একটি প্রাথমিক ভূমিকা পালন করবে এবং আপনার ক্রেডিট ব্যবহারের হার বাড়াতে সাহায্য করে, যা আপনার ক্রেডিট স্কোরে প্রতিফলন দেয়।
কিভাবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়া যায়
আপনি যখন নিয়মিতভাবে আপনার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করবেন এবং সময়মতো বিল পরিশোধ করবেন, তখন আপনার ব্যাংকের সাথে সম্পর্কে একটি মানবিক প্রফাইল তৈরি হবে। এটি আপনাকে আরও সুবিধা দেবে, যেমন ব্যয়ের সীমা বাড়াতে এবং ব্যক্তিগত ঋণ এবং অন্যান্য আর্থিক সুযোগগুলি পেতে। এটি একটি স্বাভাবিক আর্থিক সেবা নিতে আরও সুবিধা করে দেয়।