মেথির উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানে না। অথচ মেথি গ্রাম বাংলায় অনেকেই একটি শাক জাতীয় উদ্ভিদ হিসেবে প্রায় সকলেই চেনে। মেথি দিয়ে অনেক ধরণের ভেষজ ঔষধ তৈরি করা হয়। স্বাস্থ্যের জন্য মেথি অনেক বেশি উপকারি। এই শাক জাতীয় উদ্ভিদ এর সকল উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানাবো আপনাদের।
যারা মেথি শাক খান তারা নিশ্চিত ভাবেই এর উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জেনে থাকবেন। কিন্তু আমরা অনেকেই মেথি চিনি না বা এর উপকারিতা গুলো সম্পর্কে আমাদের তেমন আইডিয়া নেই। যদি আপনি মেথি সম্পর্কে বিস্তারিত একটি আর্টিকেলে জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেল টি আপনার জন্য যথেষ্ট হবে।
মেথির পরিচয়
মেথি সম্পর্কে জানার পূর্বে আমাদের জানা দরকার মেথি আসলে কি? আর মেথি এর ইতিহাস এই বা কি। মেথি কে বিজ্ঞানের ভাষায় Trigonella foenum-graecum। এটা মৌসুমি উদ্ভিদ হওয়ায় মৌসুম ছাড়া এটা পাওয়া অনেকটা দুস্কর।
আমরা পাচফোড়ন অনেকেই চিনি এই পাচফোড়ন তৈরি করার অন্যতম একটি উপাদান হলো এই মেথি। প্রতিটি মেথি উদ্ভিদে ৩-৪ টি করে পাতা থাকে ও শুধু মাত্র একবার ফল ও ফুল হয়।
সাধারণত মেথির সবচেয়ে বেশি চাষ ও ব্যবহার হয়ে থাকে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, আফগানিস্তান, ইরাক ইত্যাদি দেশ গুলোতে মেথির ব্যবহার হয় সবচেয়ে বেশি। সাধারণত রান্নার মশলা হিসেবেও মেথির ব্যবহার বেশি দেখা যায়।
মেথি দেখতে সুন্দর হলেও এর স্বাদ অনেকটা তিতা হয়ে থাকে। মেথি গ্রাম অঞ্চলে শাক হিসেবে খাওয়া হয়। আশা করি মেথির পরিচয় সম্পর্কে আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
মেথির উপকারিতা
যেহেতু মেথি একটি ভেষজ উদ্ভিদ তাই এর রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। শরির কে সুস্থ রাখার পাশাপাশি মেথি অনেক ধরণের রোগের জন্য খাওয়া হয়। মেথি সাধারণত সবচেয়ে ভালো কাজ করে হজম সমস্যার ক্ষেত্রে। যারা হজম এর সমস্যা ভুগছেন তাদের জন্য মেথি ঔষধ এর মতোই কাজ করে। এ ছাড়া ও মেথিএ সকল উপকারিতা গুলো দেখে নিতে পারেন নিচ থেকে –
১ – ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মেথির উপকারিতা
রক্তের সুগার এর পরিমান কমাতে সাহায্য করে মেথি। যদি মেথি ভিজিয়ে তার পানি খান তাহলে রক্তে সুগার এর পরিমান কমবে যার ফলে ডায়াবেটিস অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকরী ভুমিকা পালণ করতে পারবে।
📌 আরো পড়ুন 👇
মেথির মধ্যে রয়েছে এমাইনো এসিড যা শরিরে ইনসুলিন এর ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভাবে কাজ করে থাকে, যার ফলে আপনার ডায়াবেটিস বাড়তে পারে না।
২ – মাথার খুসকি দূর করতে মেথির উপকারিতা
চুলের মধ্যে খুসকি অনেকের একটি দীর্ঘ সমস্যা। আপনি কি জানেন, চুলের খুসকি দূর করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে কাজ করে থাকে এই মেথি। মেথি দিয়ে আপনি বিভিন্ন ধরণের প্যাক বানিয়ে চুলে মাখালে অল্প সময়ের মধ্যে চুলের খুসকি দূর করে দিবে।
খুসকি দূর করার জন্য যেভাবে মেথি ব্যবহার করবেন – প্রথমত আপনাকে মেথি সংগ্রহ করে সেটা সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরের দিন ভিজিয়ে রাখা মেথি ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে বা বেটে পেস্ট এর মতো করে তৈরি করে নিতে হবে। এর পরে সেটা চুলে মাখাতে হবে এর সাথে আপনি মধু বা দই বা অন্যন্য দ্রবন দিয়ে এর গুনাগুন বৃদ্ধি করে ও ব্যবহার করতে পারেন।
৩ – চুল পড়া রোধ / চুল বাড়াতে সাহায্য করে মেথি
শুধুমাত্র চুলের খুসকি দূর করার ক্ষেত্রেই মেথি কাজ করে এমন নয় বরং চুলের যত্নে সবচেয়ে ভালো কাজ করে হলো মেথি। চুল পরা একটি বড় সমস্যা আবার অনেকের চুল বেশি লম্বা ও ঘন হয়না। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার করতে পারেন মেথি। মেথি চুল পরা যেমন রোধ করে তেমনি চুল লম্বা ও ঘন করতে সাহায্য করে থাকে।
এর জন্য আপনি মেথির বিভিন্ন ধরণের তেল ব্যবহার করতে পারেন। আর আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় থাকে তাহলে মেথি সংগ্রহ করে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে। সকালে বেটে খাটি নাড়িকেল তেলের সাথে মিশিয়ে ১ /২ ঘন্টা সময় চুলে দিয়ে এর পরে গোসল করে নিতে পারেন।
৪ – হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে মেথির উপকারিতা
হজম শক্তি দূর্বল থাকার কারণে পেটে নানান ধরণের সমস্যা থাকে। পেটের এ সকল সমস্যার একটি কারণ হলো হজমের সমস্যা। হজমের সমস্যার কারণে গ্যাসটিকের সমস্যা অনেক বেশি দেখা যায়।
হজম শক্তি বাড়াতে চাইলে খেতে পারেন মেথি।কারণ মেথি তে যথেষ্ট পরিমানে রয়েছে ফাইবার ও এন্ট্যি অক্সিডেন্ট যা হজম এর কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। এর জন্য আপনাকে মেথি ভিজিয়ে সেটার পানি খেতে হবে।
৫ – অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে মেথি
অতিরিক্ত ওজন দেহের জন্য ক্ষতিকর সব রোগ বয়ে আনতে পারে। অতিরিক্ত ওজন নিয়ে অনেকেই চিন্তায় ভুগে থাকেন এ ক্ষেত্রে আপনি মেথির ব্যবহার করতে পারেন। এটা আপনার ওজন কমাতে অনেক বেশি সাহায্য করবে।
মেথির পুস্টি উপাদান এর মধ্যে রয়েছে ফাইবার যা শরিরে বেড়ে গেলে ক্ষুদামন্দা ভাব বাড়বে। যার ফলে আপনার ডায়েট কন্ট্রোলে অনেক সুবিধা হবে। এর জন্য আপনাকে খালি পেটে মেথি ভেজানো পানি পান করতে হবে।
৬ – ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে মেথির উপকারিতা
প্রাচীন কাল থেকেই রুপচর্চার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে আসছে মেথি। মেথি ত্বকের উজ্জ্বল ভাব তৈরি করতে সাহায্য করে থাকে। ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া থেকে রক্ষা করতে মেথির বিভিন্ন ধরণের মাস্ক ব্যবহার করা হয় যা কার্যকরী ভুমিকা ও পালণ করে থাকে।
মেথি দিয়ে রুপচর্চা করার জন্য বিভিন্ন ধরণের প্যাক বানাতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনাকে মেথির সাথে বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার কলে ভালো পাবেন। যেমন, মধু, দই ইত্যাদি। ত্বক যে সুন্দর হবে এমন নয়, তবে চোখের নিচের কালো দাগ ও ত্বক পরিস্কার ও রুক্ষ ভাব দূর করে দিতে পারে।
৭ – হার্টের সুস্থতা বজায় রাখতে মেথির উপকারিতা
মেথিতা থাকা উপাদান গুলো শরিরের দুষিত ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। মেথিতে পটাশিয়াম উপাদান বিদ্যমান থাকায় রক্তে লবনের পরিমান কমাতে পারে। হার্টের সুস্থতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে মেথি বেশ ভালো উপকারি বটে।
৮ – ঠান্ডার সমস্যায় মেথির উপকারিতা
আবহাওয়া পরিবর্তন এর কারণে অনেকেই ঠান্ডার সমস্যায় ভুগে থাকেন। অনেকের আবার এলার্জি জনিত ঠান্ডার সমস্যা থাকে যা থেকে রেহাই পাওয়া মুশকিল হয়ে পরে। ঠান্ডার সমস্যায় মেথি অনেক উপকার করে ঠান্ডা কমাতে।
ঠান্ডা, সর্দি কাশি তে ঘড়োয়া চিকিৎসা এর ক্ষেত্রে আপনি মেথি ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে দ্রুত ঠান্ডা সমস্যায় উপিকারিতা পাওয়া যায়। অনেক সময় সিজনাল জ্বর হয়। এ সকল জ্বর কমাতে ঘড়োয়া ভাবে মেথি দিয়ে চিকিৎসা করতে পারেন।
৯ – খোসপাঁচড়া ফোড়া প্রতিরোধে মেথির উপকারিতা
ত্বকে জীবানু এর কারণে শরিরে অনেক খোসপাচরা, ফোড়া ও চুলকানির নানান সমস্যা দেখা যায়। এ সকল রোগ গুলো কে প্রতিরোধ করার জন্য মেথি খেতে পারেন। মেথি তে থাকা উপাদান গুলো আমাদের ত্বক কে দ্রুত সময়ের মধ্যে জীবানু দূর করে দেয়।
১০ – স্ট্রোক কমাতে সহায়ক মেথি
স্ট্রোক কমাতে সামান্য হলেও উপকারিতা পাওয়া যায় মেথির মধ্যে। যদি স্ট্রোক এর ঝুকি কমাতে চান তাহলে অন্যান্য খাবার এর পাশাপাশি মেথি রাখতে পারেন। শরিরের বিভিন্ন ধরণের রোগ থেকেই আপনার শরির কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
১১ – ক্যান্সার প্রতিরোধে মেথির উপকারিতা
ক্যান্সার এর মতো রোগ থেকে শরির কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে মেথি। ক্যান্সার কোষ কে শেষ করতে মেথিতে থাকা উপাদান গুলো কাজ করে থাকে। এ সকল রোগ থেকে বাচতে মেথি নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
উপরে দেয়া উপকারিতা গুলো ছাড়াও মেথি আমাদের শরিরের অনেক উপকার করে থাকে। তবে আপনার ডায়াবেটিস থাকলে পরিমান অনুযায়ী মেথি খেতে হবে।
মেথির অপকারিতা
কোনো জিনিস এই অতিরিক্ত খাওয়া ভালো নয় স্বাস্থ্যের জন্য। মেথির ক্ষেত্রেও কথাটি একদম সঠিক। যদি আপনি মেথি পরিমান মতো না খান সে ক্ষেত্রে উপকারিতা এর পাশাপাশি অপকারিতা ও পাবেন। অতিরিক্ত মেথি খাওয়ার ফলে যে সমস্যা গুলো দেখা যায় সেগুলো হলো –
- মেথি খাওয়ার ফলে গর্ভাশয় সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে ডাক্তার এর পরামর্শ ছাড়া একদম এই খাওয়া উচিত হবে না। এতে গর্ভাশয় ও বাচ্চার ক্ষতির আশংকা থাকে।
- অতিরিক্ত মেথি খাওয়ার ফলে পেটে সমস্যা হতে পারে। যদি গ্যাসট্রিক এর সমস্যা থাকে সেটা বৃদ্ধি পেতে পারে। ডায়রিয়া বা পেট খারাপ ও দেখা দিতে পারে।
- মেথি তে যদি আপনার এলার্জি থাকে তাহলে চুলকানি, শ্বাস নেয়ার সমস্যা ও অজ্ঞান হওয়ার মতো ঘটনা ও ঘটে যেতে পারে। যদি মেথি খাওয়ার পরে এরকম লক্ষন দেখা যায় তবে মেথি আপনার জন্য না খাওয়া উত্তম হবে।
- কোনো রোগের ক্ষেত্রে যদি আপনি ঔষধ খান তাহলে ডাক্তার এর পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিৎ নয়, কারন মেথি ঔষধ এর ন্যায় কাজ করে।
- আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে আর যদি মেথি বেশি পরিমানে খান তাহলে শর্করা কমে যেতে শুরু করতে পারে। এ ক্ষেত্রেও আপনাকে ডাক্তার এর পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উত্তম হবে।
- আপনার যদি হাপানি বা শ্বাস কস্টের সমস্যা থাকে তাহলে মেথি খাওয়া উচিৎ নয়।
- পেটের কোনো গন্ডগোল থাকলে মেথির জল খাওয়া উচিত নয় এতে পেট খারাপ এর পরিমান আরো বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে।
এ ছাড়াও আরো অনেক ধরণেত সমস্যা দেখা দিতে পারে শরির ভেদে। তাই সর্বক্ষেত্রে উচিৎ হবে প্রথমে ভালো একজন ডাক্তার এর পরামর্শ গ্রহণ করা। পাশাপাশি পরিমিত পরিমান মেথি খাওয়া। উপকারিতা পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শরির কে ঝুকির মধ্যে ফেলবেন না।
মেথি খাওয়ার নিয়ম
মেথি আপনি চাইলে অনেক ভাবেই খেতে পারেন। তবে মেথি খাওয়ার সবচেয়ে সর্বোত্তম পন্থা হলো এটা ভিজিয়ে রেখে তার জল খাওয়া। এ ধরণের দ্রবণ তৈরি করার জন্য আপনাকে – এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানি নিতে হবে।
এবার এর মধ্যে ১ চামচ বা পরিমান মতো মেথি সন্ধায় ভিজিয়ে রাখুন একদম সকাল পর্যন্ত। এবার সকাল বেলা মেথি ভেজানো পানি টুকু আলাদা করে খালি পেটে অথবা আপনি চাইলে ভরা পেটে খেতে পারেন।
📌 আরো পড়ুন 👇
আপনি যে শুধু ভিজিয়ে খেতে পারেন এমন নয়। আপনি যদি চান এটা চিবিয়ে খেতে পারেন। তবে এটার স্বাদ অনেকটা তিতা হওয়ায় চিবিয়ে খাওয়াটা সবার জন্য আনন্দ দায়ক নাও হতে পারে।
যদি তিতার কারণে আপনার খাওয়ার সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে তাতে সামান্য পরিমান মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে তিতা ভাব টা অনেক টা দূর হয়ে যাবে।
এ ছাড়াও মেথি দিয়ে আপনি বিভিন্ন ধরণেত রুপচর্চার প্যাক তৈরি করে সেটা মুখে ও চুলে দিতে পারেন। এর জন্য আপনাকে পরিমান মতো মেথি নিতে হবে। এর পরে সেটা বেটে মধুর সাথে মিশিয়ে নিতে হবে। প্যাক এর মতো তৈরি করে মুখে বা চুলে দেয়ার ১ ঘন্টা পরে ধুয়ে ফেলতে হবে অথবা গোসল করে নিতে পারেন।
পুরুষের জন্য মেথির উপকারিতা
মেথির উপকারিতা গুলো নারী – পুরুষের জন্য সমান হয়ে থাকে। যদি আলাদা করে বলতে হয় তবে পুরুষের ক্ষেত্রে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি তে মেথি অনেক ভালো ভাবে কাজ করে। পাশাপাশি পুরুষের শরিরে শক্তি বাড়াতে ও শুক্রানু বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।
পুরুষের হরমোন এর ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতেও মেথি সাহায্য করে থাকে। এ ছাড়াও পুরুষের ক্ষেত্রে নানান ধরণের উপকারিতা মেথি তে পাওয়া যায়। যদি আপনি পুরুষ হয়ে থাকেন তাহলে মেথি ভিজিয়ে তার জল খেতে পারেন এতে নানান ধরণের স্বাস্থ্য উপকারিতা পাবেন।
মেথির উপকারিতা চুলের জন্য
চুলের বিভিন্ন ধরণের সমস্যা রোধে বিশেষ ভাবে কাজ করে থাকে মেথি। যদি চুলের নিচেত সমস্যা গুলো আপনার থাকে তাহলে মেথি ব্যবহার করতে পারেন চুলের জন্য –
১ – খুসকি কমায়
চুল খুসকি হওয়ার ফলে চুল পরে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা যায় ও চুলের সৌন্দর্য নস্ট করে দেয় চুলের খুসকি। এই খুসকি দূর করতে নানান ধরণের শ্যাম্পুর চেয়েও ভালো কাজ করে মেথি।
📌 আরো পড়ুন 👇
আপনি মেথি গুড়া করে অথবা মেথির গুড়া বাজার থেকে ক্রয় করে সেটা দিয়ে প্যাক তৈরি করে চুলে ব্যবহার করে ধুয়ে ফেললে আপনার চুলের খুসকি অনেকটা দূর হবে।
২ – চুল পড়া রোধে
যদি আপনার চুল পরার সমস্যা থাকে তবে মেথি আপনার জন্য সেরা একটি উপায় হতে পারে। চুল পরার সমস্যা থাকলে মেথির প্যাক অথবা মেথির তেল চুলে ব্যবহার করতে পারেন।
৩ – চুল পাকা রোধ
অকালে চুল পাকা অনেক বড় ধরণের সমস্যা। যদি বয়স হওয়ার পূর্বেই আপনার চুল পেকে যেতে শুরু করে তাহলে মেথি চুলে ব্যবহার করা শুরু করে দিতে পারেন। পর্যাপ্ত আয়োডিন ও ভিটামিনের অভাবে অকালে চুল পেকে যায়।
৪ – চুল নরম করে
আপনার চুল যদি অনেক শক্ত ও নরম না থাকে তাহলে সেটা দেখতে অতটা ভালো লাগে না। চুলে মেথির ব্যবহার এর ফলে চুল আগের চেয়ে সুন্দর ও নরম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৫ – নতুন চুল গজায়
চুলের বৃদ্ধি করতে চাইলে আপনাকে মেথি ব্যবহার করা উচিৎ। এর ফলে আপনার পূর্বের তুলনায় বেশি চুল গজাবে নতুন করে।
এ ছাড়াও চুলের সকল সমস্যা দূর করার জন্য মেথি অনেক ভালো ভাবে কাজ করে। চুলের যে কোনো সমস্যায় মেথি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
ডায়াবেটিসে মেথি খাওয়ার নিয়ম
মেথির অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতার পাশাপাশি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভুমিকা পালণ করতে সক্ষম। তবে, অতিরিক্ত মেথি খাওয়ার ফলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। মেথি রক্তে শর্করার পরিমান কমিয়ে দিতে সাহায্য করে যদি এটা বেশি পরিমানে খাওয়া হয় তবে রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি কমে যাবে এবং সমস্যার সৃষ্টি হবে।
যাদের ডায়াবেটিস আছে ও কম ক্যালরির খাদ্য গ্রহণ করেন তাদের ক্ষেত্রে মেথি উপকারি। তবে যাদের বেশি ক্যালরির খাদ্যের অভ্যাস আছে তারা মেথি না খাওয়া উত্তম হবে।
আর আপনি যদি ইতিমধ্যে কোনো ডায়াবেটিস এর ঔষধ গ্রহণ করে থাকেন তাহলে ডাক্তার এর পরামর্শ ছাড়া মেথি একদম খাওয়া যাবে না। কারণ মেথি কিন্তু ঔষধ এর মতোই কাজ করে এবং ভেষজ হওয়ায় এটা ধীরে ধীরে কাজ করে।
📌 আরো পড়ুন 👇
আপনি যদি ডায়াবেটিস এর রোগি হোন আপনার ক্যাটাগেরি অনুযায়ী পর্যবেক্ষন এর মাধ্যমে এই ভেষজ উদ্ভিদ মেথি খেতে হবে। তাই কোনো ভাবেই ডাক্তার এর পরামর্শ ছাড়া মেথি খাবেন না তাহলে সমস্যায় পরে যেতে পারেন। যেহেতু ধীরে ধীরে এটা কাজ করে হুট করেই টের পাবেন না আর দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি করবে শরিরে।
প্রশ্ন উত্তর
মেথি পাওডার খাওয়ার নিয়ম?
বাজারে অনেক মেথির পাউডার পাওয়া যায় যা সরাসরি আপনি পানিতে ভিজিয়ে সেটার জল খেতে পারেন। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি আপনি মেথি আপনি নিজে সংগ্রহ করে নিয়ে নিজে বানিয়ে নিতে পারেন।
মেথির দাম কত?
মেথির দাম স্থান ভেদে ভিন্ন হতে পারে। তবে বর্তমানে বাজারে আপনি ১ কেজি পরিমান মেথি ২৮০ টাকার মধ্যে ক্রয় করতে পারবেন।
মেথি সম্পর্কে আমাদের মতামত
মেথির উপকারিতা আর্টিকেলে আমরা মেথি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। উল্লেখ্য যে, মেথি খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তার এর পরামর্শ নিবেন। তাহলে শারিরিক কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না।
কেনো বিষয় যদি বুঝতে অসুবিধা হয় অথবা কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে কমেন্ট করতে পারেন। এতক্ষন প্রযুক্তির বাংলা ব্লগের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।