মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার সুযোগ কে বা হাত ছাড়া করতে চায়। আপনার যদি একটি স্মার্টফোন থাকে, তাহলে আপনি ঘরে বসে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
বর্তমান সময়ে মোবাইল ব্যবহার করেন না এমন মানুষ হয়তো অনেক কম আছেন। সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন থাকলেও প্রায় অধিকাংশ মানুষ স্মার্টফোন থেকে টাকা আয় করা যায় এ বিষয়ে ভালো ভাবে জানেন না।
বন্ধুরা, আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার উপায় গুলো সম্পর্কে। আপনি যদি মোবাইল দিয়ে আয় করার কথা ভেবে থাকেন, তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেল টি শেষ পর্যন্ত পড়ে ফেলুন।
মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম
বর্তমানে আপনি চাইলে মোবাইল দিয়ে অনেক ভাবে টাকা আয় করতে পারবেন। অনেকে ভাবতে পারেন যে, মোবাইল দিয়ে ইনকাম করবেন কোনো এপসের ভিডিও দেখে, নয়ত এডস দেখে। কিন্তু আপনি এভাবে মূলত কোনো টাকা আয় করতে পারবেন না।
যদি করতে পারেন ও প্রচুর পরিমান সময় এটার পিছনে আপনাকে ব্যায় করতে হবে যে তুলনায় ইনকামের পরিমান অনেক কম হবে।
দেখুন আমি বলছি না যে আপনি আর্টিকেল টি পড়লেই মোবাইল দিয়ে আয় করতে পারবেন তবে কিভাবে ইনকাম করবেন সেটা বিস্তারিত তুলে ধরতে পারব।
মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার উপায় গুলো হলো –
১। আর্টিকেল রাইটিং
মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করার অন্যতম একটি উপায় হলো আর্টিকেল রাইটিং। দেখুন আপনি মোবাইল দিয়ে আয় করেন অথবা কম্পিউটার দিয়ে সেখানে আপনার মেধা ও দক্ষতার প্রমান দিতে হবে। আর্টিকেল লেখার জন্য আপনার শুধু মাত্র একটি ফোন যথেষ্ট।
এখন, ‘প্রশ্ন আসতে তাহলে আর্টিকেল রাইটিং কি?’
আপনি বর্তমানে যে লেখাটি পরছেন এটা একটি আর্টিকেল। আপনি যে সব বিষয়ের উপর জ্ঞান রাখেন এবং সে গুলো যদি লেখার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে পারেন তাহলে আর্টিকেল রাইটিং এর কাজ আপনি করতে পারবেন।
আর্টিকেল রাইটিং এর সাথে যুক্ত অনেক গুলো কাজ আছে যেমন আপনি চাইলে বিভিন্ন ধরণের বিজ্ঞাপনের স্ক্রিপ্ট লিখতে পারেন, মুভি এক্সপ্লেইন স্ক্রিপট লিখতে পারেন।
এখন কথা হলো ‘এ ধরণের কাজ কোথায় ও কিভাবে পাবেন?’
এ কাজ গুলো আপনি অনেক মাধ্যমে পেতে পারেন। বর্তমানে আপনি চাইলে অনেক ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লিখে আয় করতে পারেন যার মধ্যে কয়েকটি হলো –
এ ছাড়াও অনেক ধরণের সাইট পেয়ে যাবেন একটু গুগল করলে। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধরণের সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম থেকে আপনি বিভিন্ন ধরণের ক্লায়েন্ট ম্যানেজ করে তাদের ওয়েবসাইটে লেখা পাবলিস করতে পারেন। এসকল সাইট থেকে প্রতিমাসে প্রায় ১০-১৫ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, ‘এটাও কি সম্ভব!’
তাহলে আপনাকে বলে রাখি, আর্টিকেল রাইটিং এর কাজ করে অনেকে প্রতিমাসে ১ লাখেরও বেশি টাকা আয় করছে।
২। মাইক্রো জব
মাইক্রো জব অনলাইন থেকে টাকা আয় করার জন্য একটি সহজ মাধ্যম। মাইক্রো জব থেকে আপনি কোনো প্রকার অতিরিক্ত দক্ষতা ছাড়া টাকা আয় করতে পারবেন। আপনি যদি মোবাইল ব্যবহার করতে পারেন তাহলে মাইক্রো জব এর কাজ গুলো সহজে করতে পারেন।
📌 আরো পড়ুন 👇
মাইক্রো জব হলো ছোট ছোট টাস্ক এর মাধ্যমে টাকা আয় করা। এখান থেকে আপনি ছোট ছোট কাজ করার মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবেন। মাইক্রো জব এর কাজ গুলো করতে আপনার কোনো প্রকার বাড়তি দক্ষতার প্রয়োজন হবে না। মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার জন্য এটি অন্যতম।
মাইক্রো জব এর কাজ গুলো সাধারনত হয়ে থাকে বিভিন্ন ধরণের টাস্ক পুরন করার কাজ। এখানে, ফেসবুকে ফলো করা, ইউটিউব সাবস্ক্রাইব করা ইত্যাদি কাজের পরিমান অনেক বেশি থাকে।
বর্তমানে এই কাজের চাহিদা অনেক পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এই কাজের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্লাটফরম তৈরী হচ্ছে। MicroWorkers নামক একটি ওয়েবসাইট আছে। এখানে থেকে আপনি খুব সহজেই মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।
৩। সার্ভে করে আয়
মোবাইল দিয়ে আয় করার আরো একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হলো সার্ভে এর মাধ্যমে আয় করা। বিভিন্ন ধরণের কোম্পানি গুলো তাদের কোম্পানি ও ব্রান্ড সম্পর্কে কাস্টমার দের মতামত গ্রহনের ক্ষেত্রে সার্ভে গুলো করে থাকে বিভিন্ন সাইটের মাধ্যমে।
এই সার্ভে গুলো পূরণ করার মাধ্যমে আপনি টাকা আয় করতে পারবেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় বাংলাদেশে সার্ভে অনেক কম থাকে, যার ফলে আপনি যদি বাংলাদেশের ছাড়া ভিন্ন কোনো আইপি এড্রেস দিয়ে সার্ভে করেন সে ক্ষেত্রে মোটামুটি আয় করতে পারবেন।
সার্ভে এর কাজ গুলো অতি সহজ। আপনাকে বিভিন্ন ধরণের প্রশ্ন করা হবে। এবং কিছু অপশন দেওয়া হবে। এগুলোর মধ্যে আপনার মতামত সিলেক্ট করবেন। ব্যাস! আপনার কাজ শেষ। এই সহজ কাজটি করে আপনি মাসে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
সার্ভে করে আয় করার জন্য survey junky, paid survy ইত্যাদি অনেক অনেক সাইট আপনি পেয়ে যাবেন। আপনি আপনার পছন্দ মতো সাইটে কাজ করতে পারবেন। এমনকি আপনি একসাথে সবগুলো সাইটে কাজ করতে পারবেন। এতে আপনার ইনকাম বেশি হবে।
৪। পণ্য বিক্রি করে মোবাইল দিয়ে আয়
মোবাইলের মাধ্যমে টাকা আয় করার সহজ একটি মাধ্যম হলো পন্য বিক্রি করে আয় করা। এ ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আপনি বিভিন্ন ধরণের পন্য বিক্রি করতে পারেন। যেমন:
- কেক বা হোম মেইড ফুড
- স্মার্ট গেজেট
- পোশাক ইত্যাদি
প্রথমে আপনাকে একটি বিজনেস পেজ খুলতে হবে, যে কোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলোতে। আমার মতে একই নাম দিয়ে বিভিন্ন প্লাটফরমে এ্যাকাউন্ট তৈরী করুন। এতে করে আপনি খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করবে। এবং আপনার পন্য বিক্রয় বৃদ্ধি পাবে।
প্রোফেসনাল এ্যাকাউন্ট বা বিজনেজ পেজ ওপেন করার পর আপনি যে পন্য গুলো বিক্রি করবেন, সেগুলোর সুন্দর ভাবে ছবি তুলে বিস্তারিত লিখে পোস্ট করে বিক্রি করতে পারেন।
তবে খেয়াল রাখবেন আপনার পন্য গুলো যেন আকর্ষণীয় হয়। এছাড়াও কাস্টমারের কাছে পন্যগুলো এমন ভাবে উপস্থাপন করুন, যাতে তারা সহজেই বুঝতে পারে এবং আপনাকে বিশ্বাস করতে পারে।
৫। এফিলিয়েট মার্কেটিং
মোবাইল দিয়ে আপনি চাইলে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। বিভিন্ন ধরণের ব্রান্ড বা পন্য এর প্রচারনা করার জন্য অনেক ভাবে একটি মোবাইল যথেষ্ট।
আপনি মোবাইলের মাধ্যমে এ সকল কাজ গুলো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে করে নিতে পারবেন। যেমন ধরুন, ফেসবুকে কোনো পন্যের বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য একটি মোবাইল এই যথেষ্ট।
📌 আরো পড়ুন 👇
ফেসবূকে কোনো পন্য সম্পর্কে বিস্তারিত লিখে বা ভিডিও উপলোড করে আপনার এফিলিয়েট লিংক শেয়ার করুন। এই লিংক থেকে কেউ যদি পন্যটি ক্রয় করে তাহলে আপনি যে কমিশন পাবেন সেটিই হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং।
ফেসবুক বা অন্য কোনো যে কোনো সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আপনি মোটা অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এসব কাজ আপনি মোবাইল দিয়ে খুব সহজেই করতে পারবেন।
৬। ব্লগিং করে আয় করুন
আপনার যদি লেখালেখির অভ্যাস থাকে তাহলে ব্লগিং করে আয় করতে পারেন। ব্লগিং করে আয় করার জন্য আপাত দৃষ্টিতে একটি মোবাইল দিয়ে শুরু করতে পারেন।
মোবাইল দিয়ে ব্লগিং এর শুরুতে ওয়ার্ডপ্রেস বা ব্লগার এর মাধ্যমে আপনাকে ব্লগ সেটআপ করতে হবে। তবে ওয়ার্ডপ্রেসে ব্লগ তৈরী করতে হলে ডোমেইন এবং হোস্টিং এর জন্য কিছু অর্থ ব্যয় করতে হবে।
আপনি চাইলে ব্লগার.কম এর মাধ্যমে কোনো প্রকার টাকা ছাড়াই ব্লগিং এর উপরে কাজ করতে পারেন। যদি আপনি বিগিনার হয়ে থাকেন তবে ফ্রি তে শুরু করে দেখতে পারেন।
ব্লগ সেটআপ করার পর ধীরে ধীরে আর্টিকেল পাবলিশ করুন। মানসম্মত কনটেন্ট থাকলে এডসেন্সের জন্য এপ্লাই করুন। এডসেন্স এপ্রুভ হলে ব্লগে এড দেখাবে, এই এড দেখানোর ফলে আপনি আয় করতে পারবেন।
এছাড়াও স্পন্সর পোষ্ট এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং বা এফিলিয়েট পোষ্টের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। এসকল কাজ আপনি মোবাইল দিয়েই করতে পারবেন।
৭। ইউটিউবিং করে আয় করুন
ইউটিউব সম্পর্কে জানে না এমন কোনো মানুষ নেয়। আর ইউটিউবে পাওয়া যায় না এমন কোনো জিনিস নেই। পড়াশোনা, ব্যবসা, স্বাস্থ্য, টেকনোলজী সম্পর্কে সকল তথ্য খুব সহজেই ইউটিউবে পেয়ে যাবেন।
এছাড়াও মোটিভেশনাল এবং বিনোদনমূলক ভিডিও তো আছেই। মোট কথা হলো এমন কোনো টপিক নেই, যা সম্পর্কে ইউটিউবে তথ্য বা ভিডিও নেই। পৃথিবীর মধ্যে এবং বাইরের বিষয়বস্তু সম্পর্কেও ইউটিউবে তথ্য আছে।
এই সকল তথ্য কি ইউটিউবে এমনি এমনিই আসছে। না, আমার আপনার মতো মানুষগুলোই এইসব টপিক সম্পর্কে জেনে ভিডিও তৈরী করেছে। আর সেসকল ভিডিও ইউটিউবে আপলোড দিয়ে লাখ টাকা ইনকাম করছে।
মোবাইল দিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম
হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা আয় করা সম্ভব। আপনিও চাইলে করতে পারবেন।
আপনার যদি একটি স্মার্টফোন থাকে, তাহলে আপনিও ইউটিউব থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এর জন্য আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট দিয়ে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে।
📌 আরো পড়ুন 👇
এরপর ভিডিও তৈরী করে আপলোড করতে হবে। আস্তে আস্তে ভিডিও তে ভিউজ আসবে এবং সাবস্ক্রাইবার বাড়বে।
আর যখন এক বছরের মধ্যে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা বেড়ে ৫০০ হবে, এবং ৩০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম পূর্ন হবে। তখন আপনি এডসেন্সের জন্য এপ্লাই করতে পারবেন।
এডসেন্স এপ্রুভ হলে ভিডিও তে এড দেখেবে। আর এখান থেকে আপনার ইনকাম শুরু হবে। এডসেন্স ছাড়াও স্পন্সর এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা আয় করতে পারবেন।
এসকল কাজ মোবাইল দিয়ে খুব সহজেই করতে পারবেন। আসলে মোবাইল দিয়ে ইউটিউবিং জন্য সময় এবং একটু পরিশ্রমের প্রয়োজন। তবে আপনি যদি ধর্য্য ধরে ইউটিউবে কাজ করতে পারেন, তাহলে আপনি সফল হতে পারবেন। মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকামের জন্য ইউটিউব একটি অন্যতম মাধ্যম।
৮। ফেসবুকিং করে আয় করুন
সোশ্যাল মিডিয়ার যেসকল প্লাটফরম আছে সেসবের মধ্যে ফেসবুক অন্যতম। ফেসবুকে প্রচুর মানুষ এক্টিভ থাকে। এজন্য অনলাইন থেকে আয় করার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক।
আপনি মোবাইল দিয়ে ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে পারবেন। ইউটাউবের মতোই একই ভাবে ফেসবুক থেকে টাকা আয় করতে পারবেন। ফেসবুক থেকে নানা ভাবে টাকা আয় করা যায়। যেমন:
- এডসেন্স থেকে
- স্পন্সর থেকে
- এফিলিয়েট করে
- ফুড রিভিউ করে
- বিভিন্ন পন্যের রিভিউ করে
- বিভিন্ন পন্য বিক্রি করে
- ছবি ইডিটিং করে ইত্যাদি
ইউটিউবের তুলনায় ফেসবুক থেকে আয় করার সহজ। আর এসকল কাজ আপনি ফেসবুক মোবাইল অ্যাপস দিয়ে করতে পারবেন।
এছাড়াও আর একটি সুবিধা হলো একই ভিডিও আপনি ইউটিউব ও ফেসবুকে আপলোড করে ইনকাম করতে পারবেন। আমার কাছে মনে হয় মোবাইল দিয়ে ইনকাম করার যতগুলো উপায় আছে তাদের মধ্যে অন্যতম।
এমন অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর আছে যারা প্রথমে মোবাইল দিয়ে ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করা শুরু করেছে। সফলতা পেয়ে পরবর্তীতে অন্য প্লাটফরমে কাজ করা শুরু করেছে। তাই আপনিও মোবাইল দিয়ে ফেসবুক থেকে ভালো পরিমান টাকা আয় করতে পারবেন।
৯। ড্রপশিপিং করে মোবাইল দিয়ে ইনকাম
বর্তমানে আপনি শুধু মাত্র মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ড্রপশিপিং এর মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবেন। আপনার যদি ফেসবুক মার্কেটিং বোঝেন, তাহলে ড্রপশিপিং করে ইনকাম করা আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে।
ধরুন আপনার একটি ফেসবুক পেজ আছে। সেখানে আপনি কোন পন্য বিক্রি করবেন। (সেটা যে কোনো পন্য হতে পারে) এর জন্য আপনাকে সেই পন্য স্টক করতে হবে, এরপর পার্সেল করতে হবে, হিসাব নিকাশ করতে হবে। অনেক ঝামেলা! একজনের পক্ষে এতো কিছু করা মোটেও সহজ না।
এজন্য BDShop এর DropShop নামক একটি ড্রপশেপিং সেকশন আছে। তারা আপনার ঝামেলা বহন করবে। এর জন্য আপনাকে প্রথমে ৩০০০ টাকা (কম বেশি হতে পারে) দিয়ে জয়েন হতে হবে।
এখন আপনাকে শুধু পন্যগুলো ওডার নিতে হবে, এবং কাস্টমারের নামে ড্রপশপে ওডার করতে হবে। আর বাকি কাজ তারা সামলাবে। এমনকি তারা পন্যটি কাস্টমারের হাতে আপনার নামে পৌঁছে দেবে।
ড্রপশপ থেকে যেভাবে ইনকাম করবেন
ড্রপশপের ক্যাটাগরী থেকে আপনার পছন্দ মতো পন্য সিলেক্ট করুন। পন্যটির সকল তথ্য জেনে নিন। এবার ফেসবুকে অথবা অন্য কোনো সোশ্যাল মিডিয়া তে পন্যটি সম্পর্কে পোষ্ট করুন। যদি সোশ্যাল মিডিয়া তে আপনার ফলোয়ার কম থাকে, তাহলে আপনি পোষ্টটির বিজ্ঞাপন বা স্পন্সর করতে পারেন। এতে আপনার পন্যটি যথাযত কাস্টমারের নিকট পৌঁছাবে এবং আপনার সেল বেশি হবে।
১০। ছবি বিক্রি করে ইনকাম
মোবাইল দিয়ে ইনকাম করার উল্লেখ্য যোগ্য জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো ছবি বিক্রি করে ইনকাম করা। আপনার স্মার্টফোনের ক্যামেরা যদি ভালো হয় তাহলে সেটা দিয়ে যে সকল ছবি আপনি তুলবেন সেগুলো ভালো দামে আপনি বিক্রি করে দিতে পারবেন।
এখন আপনি ভাবতে পারেন, ‘আপনার এই ছবি কিনবে কারা?’
এমন অনেক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আছে, যারা কন্টেন্ট বানানোর সময় এসব ছবির প্রয়োজন হয়। তখন তারা ছবি ব্যবহারের জন্য আপনাকে অর্থ প্রদান করবে।
📌 আরো পড়ুন 👇
আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা মোবাইলে প্রচুর পরিমানে বিভিন্ন ধরণের ছবি তুলে থাকেন। এ ক্ষেত্রে যারা মোটামুটি ফটোগ্রাফি পছন্দ করেন তাদের জন্য ইনকাম করা টা অনেক সহজ হবে।
অনলাইনে এমন অনেক প্লাটফরম আছে, যারা ফ্রী-তে আপনাকে ছবি আপলোড করার সুযোগ দিবে। আপনি সেখান ছবি আপলোড করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ছবি কোথায় বিক্রি করবেন?
আসলে ছবি বিক্রি করার অনেক গুলো প্লাটফর্ম রয়েছে। ছবি বিক্রি করার ক্ষেত্রে কয়েক টি শর্ত থাকে যেগুলো পূরণ না হলে আপনার দেয়া ছবি কখনো এপ্রুভ হবে না। তার মধ্যে দুটি কারণ হলো – আপনার নিজের তোলা ছবি হতে হবে ও কোনো প্রকার এডিটিং ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা যাবে না।
ছবি বিক্রি আয় করার জন্য নিচের ০৫ টি ওয়েবসাইট অনেক জনপ্রিয় –
এখানে, বিভিন্ন ওয়েবসাইট অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের শর্ত দেয়া আছে। একাউন্ট করার সময়ে টার্মস এন্ড কন্ডিশন গুলো ভালোভাবে পড়ে নিবেন তাহলে আর সমস্যা হবে না।
১১। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার
মোবাইল দিয়ে ইনকাম করার আরো একটি সহজ মাধ্যম বলা যায় এটি। আমরা বিভিন্ন ধরণের সোশ্যাল মিডিয়া পেজ দেখে থাকি এই সকল পেজ গুলো কখনো একার পক্ষে প্রতিনিয়ত দেখাশোনা করা সম্ভব হয় না।
বিশেষ করব, সেলিব্রেটি গন তাদের পেজের জন্য আলাদা লোক রাখেন যারা পেজে প্রতিনিয়ত পোস্ট করে থাকে। এই কাজ গুলো চাইলে আপনি করতে পারেন। মোবাইল দিয়ে আপনি এ কাজ গুলো খুব সহজে করতে পারবেন।
এসব কাজ করার জন্য আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে এক্সপার্ট হতে হবে।
১২। অনলাইন টিচিং
বর্তমান অনলাইনের যুগে আমাদের শিক্ষা অংশ টাও অনলাইন ভিত্তিক হয়ে গেছে। এখন, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা দূরে কোথাও প্রাইভেট পড়ার চেয়ে অনলাইনে ঘরে বসে পড়া কে বেটার মনে করে।
করোনাকাল থেকেই অনলাইন টিচিং অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনি যদি পড়িয়ে টাকা আয় করতে চান, তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে অনলাইন টিচিং।
টিচিং প্রফেসন হিসেবেও অনেকেই নিয়েছে। আমরা বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া তে অনেককেই দেখতে পাই। তারা ইউটিউব এবং ফেসবুক লাইভে ক্লাস নিচ্ছে। এর জন্য আপনাকে শিক্ষার্থী আছে এমন সব গ্রুপ গুলোতে যুক্ত হতে হবে। সেখানে আপনি কয়েকটি ফ্রি ক্লাস করাতে পারেন।
এর পরে আপনি পেইড ক্লাসের মাধ্যমে মোবাইল দিয়ে ইনকাম করতে পারবেন। যারা টিচিং এর ক্ষেত্রে ভালো দক্ষতা আছে এ কাজটি শুধু মাত্র তাদের জন্য ভালো হবে।
১৩। ই-বুক পাবলিশ করে আয়
মোবাইল দিয়ে ইনকাম করার আরো একটি মাধ্যম হলো ই-বুক পাবলিশ করে আয় করা। আপনি যদি ছোট ছোট গল্প বা টিয়োটোরিয়াল বই আকারে সাজাতে পারেন তবে এই ধরণের কাজ আপনার জন্য।
ই- বুক বিক্রি করে মাসে আপনি কয়েক হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। প্রথমে আপনাকে একটি ই- বুক লিখতে হবে। যদি আপনার বই টি আপনি ইংরেজি ভাষায় লিখে থাকেন তাহলে Amazon এ সেটা বিক্রি করতে পারবেন আর যদি বাংলায় লিখেন তবে Watpad, Rokomari এবং বিভিন্ন সিম কম্পানির এ্যাপস এর মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন।
১৪। ট্রান্সলেশন করে আয় করুন
মোবাইল দিয়ে ইনকাম করার অন্য আরেকটি পরিচিত মাধ্যম হলো ট্রান্সলেসন করে আয় করা। এর জন্য আপনাকে যে কোনো দুটি ভাষায় পারদর্শী হতে হবে। ধরুন, আপনি হিন্দি জানেন পাশাপাশি বাংলা ও জানেন।
এ ক্ষেত্রে হিন্দি থেকে বাংলা, অথবা বাংলা থেকে হিন্দি ট্রান্সলেট করে আয় করতে পারবেন। আর সবচেয়ে ভালো দিক হলো এটা আপনি মোবাইলের মাধ্যমেই করে ফেলতে পারবেন। ফেসবুকে অথবা মার্কেটপ্লেসে ট্রান্সলেশন এর কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে বর্তমানে।
১৫। ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট
মোবাইল দিয়ে আপনি ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট এর কাজ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের কাজ করতে বলা হবে সেগুলো আপনি মোবাইল দিয়ে করবেন।
যেমন – আপনি একজন এর ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বললেন আপনাকে ৩০ টি মেইল সেন্ড করতে হবে তো আপনি ৩০ টি মেইল সেন্ড করবেন। অর্থ্যাৎ আপনি মোবাইল দিয়ে যে কাজ গুলো করতে পারবেন সেগুলোর উপরে মার্কেটপ্লেসে অফার করতে পারেন।
১৫। স্টক ট্রেডিং করে আয়
মোবাইল দিয়ে বর্তমানে আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম এটি। তবে আমি কখনোই এটা কে প্রধান্য দিতে বলব না। অনলাইনে বর্তমানে ট্রেডিং এর অনেক ধরণের এপস আছে যেগুলো তে স্টক ট্রেডিং করে আয় করতে পারেন। যদি আপনি সেটা ভালো ভাবে বুঝেন। তবে মোবাইল দিয়ে ইনকাম করার উপায় গুলোর মধ্যে এটি না।
কেননা এখানে লস হওয়ার সম্ভবনা বেশি। এবং আপনার পরিশ্রম বিফলে যেতে পারে। তাই আমার মতে এসব প্লাটফর্মে কাজ না করাই ভালো।
১৬। রিমোট কাস্টমার সাপোর্ট
অনলাইনে বিভিন্ন ধরণের ওয়েবসাইট আছে যেগুলো ২৪/১৫ ঘন্টা কাস্টমার সাপোর্ট সুবিধা প্রদান করে। এই ধরণের কাজ গুলো আপনি মোবাইল দিয়ে করতে পারেন।
রিমোট কাস্টমার সাপোর্টের কাজটি একেবারেই সহজ। আপনি যে প্লাটফর্মে কাজ করবেন, সেই প্লাটফর্ম সম্পর্কে আপনার পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকতে হবে। যাতে আপনি কাস্টমারকে সঠিক তথ্য প্রদান করে তাকে সাহায্য করতে পারেন।
আপনার কাজ হবে – কোনো ক্রেতা যদি মেসেজ দিয়ে সাহায্য চায় তাকে সাহায্য করা। আর আপনার অপেক্ষা করা কখন কোন কাস্টমার মেসেজ দেয়। এই ধরনের কাজ গুলো করে ভালো পরিমান টাকা মোবাইল দিয়ে ইনকাম করা যায়।
১৭। অনলাইন রি-সেল করে আয় করুন
অনলাইনে বিভিন্ন ধরণের রিসেল করে মোবাইল দিয়ে ইনকাম করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে যে কোনো পন্য হতে পারে। আপনি চাইলে পন্য থেকে শুরু করে ডোমেইন / হোস্টিং, পিডিএফ অথবা জিপ ফাইল রিসেল করেও আয় করতে পারেন।
আপনার মোবাইল ফোন যথেষ্ট এ সকল কাজের জন্য। আপনি যে প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট রিসেল করবেন তাদের সাথে চুক্তি করুন ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সেগুলো বিক্রি করে দিন।
এক্ষেত্রে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
১৮। সাবস্ক্রিপশন বিক্রি করে আয়
ফেসবুক নিউজফিডে প্রায়ই এমন স্পন্সর পোষ্ট দেখা যায়, যেখানে অল্প মূল্যে বা কয়েক মাসের জন্য সাবস্ক্রিপশন বিক্রি করা হয়। আপনিও একটি ফেসবুক পেইজ তৈরি করে এভাবে সাবস্ক্রিপশন বিক্রি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
বিভিন্ন ধরণের OTT প্লাটফর্ম এর সাবস্ক্রিপশন বিক্রি করে আয় করতে পারেন শুধু মাত্র মোবাইলের মাধ্যমে। যেমন – আপনি চাইলে নেটফ্লিক্স, এমাজন, আইপি টিভি ইত্যাদির সাবক্রিপসন ক্রয় করে মোবাইল দিয়ে বিক্রি করে ইনকাম করতে পারেন।
১৯। অপারেটর প্যাকেজ বিক্রি করে আয়
মোবাইল ইনকাম করার আরো একটি সহজ মাধ্যম হলো অফার বিক্রি করে আয় করুন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সিম কার্ড অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের অফার অনেক কম দামের মধ্যে পাওয়া যায়।
যেগুলো বিক্রি করে প্রতি অফার বিক্রি করে ৩০-৫০ টাকা আয় করা যায়। আপনি যদি প্রতিদিন ২০ টা অফার বিক্রি করেন ৫০০/১০০ টাকা আয় থাকবে। এজন্য আপনাকে আলাদান ভাবে প্যাকেজ দেয়ার জন্য সাবস্ক্রিপশন নিতে হবে।
এগুলোকে পাওয়ার লোড বলা হয়। প্রতিটা পাওয়ার লোডে কিছু ক্যাশব্যাক দেয়। এক্ষেত্রে আপনি আপনার পরিচিত রিটেইলারের (যিনি ফ্লেক্সিলোড করেন) সাহায্য নিতে পারেন।
২০। নিজের তৈরি জিনিস বিক্রি করে আয়
বাসায় আমরা অনেকেই নিজের হাতে অনেক কিছুই তৈরি করতে পারি। হোমমেড খাবার থেকে শুরু করে লাইট অথবা ফ্যান এগুলোর মার্কেট সবচেয়ে ভালো।
মানুষ দোকান থেকে কিছু কেনার পূর্বে এগুলো কে বেশি প্রধান্য দিয়ে থাকে। যদি আপনার টেক সম্পর্কে ভালো আইডিয়া থাকে তাহলে পাওয়ার ব্যাংক, ছোট ফ্যান, লাইট ইত্যাদি জিনিস তৈরি করে মোবাইল দিয়ে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়া তে দিয়ে মার্কেটিং করতে পারেন।
আপনি যদি ভালো মার্কেট পেয়ে যাবেন এটা কে প্রফেশনাল ভাবেও করতে পারবেন। তাছাড়া হোম মেড বিভিন্ন ধরণের খাবার তৈরি করেও বিক্রি করতে পারেন।
বর্তমানে কাগজের তৈরি জিনিসপত্র বেশি জনপ্রিয় হয়ে থাকে। আপনি এগুলো বানানোর পাশাপাশি যেভাবে বানাতে হয়, সেগুলো ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করুন। এতে আপনার প্রতি কাস্টমারের আস্থা বাড়বে এবং এসব সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ভালো পরিমাণে টাকা আয় করতে পারবেন।
এখন ভাবছেন, ‘ভিডিও করলে সবাই তো টেকনিক জেনে যাবে। তখন আমার থেকে কেন কিনবে?’
তবে আপনার এই ধারণা ভুল। ভিডিও দেখে সবাই এগুলো বানাতে পারে না। কেননা এগুলো বানাতে অনেক সময় ও ধর্য্যের প্রয়োজন। যা সবার থাকে না।
মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম সম্পর্কে আমাদের মতামত
মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার উপায় আর্টিকেলে আমরা ২০টি মাধ্যম সম্পর্কে আপনাদের জানালাম, যেখান থেকে টাকা আয় করতে পারবেন। তবে অনেকেই ইদানিং বিভিন্ন এপ এ ট্রেডিং করে সহজে আয় করতে চাচ্ছেন যেগুলো স্ক্যাম। যা আপনাদের টালা পয়সা নিয়ে উধাও হয়ে যাবে। ইনকাম করতে শ্রম দেয়ার প্রয়োজন পরে সেটা সব ক্ষেত্রেই।
এজন্য সততার সাথে ধর্য্য ধরে কাজ করতে হবে। তবে মনে রাখবেন, শুরুতেই আপনি যদি অনেক টাকা আয় করতে চান তা কখনোই সম্ভব নয়। আপনাকে স্মার্ট ওয়ার্ক এবং হার্ড ওয়ার্ক করতে হবে। কেননা বর্তমানে যে কাজই করেন না কেন, সেখানে কম্পিটিশন অনেক বেশি।
আজকের আর্টিকেলে আমরা মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেছি । এসকল বিষয় যদি বুঝতে অসুবিধা হয় অথবা কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে কমেন্ট করতে পারেন। এতক্ষন প্রযুক্তির বাংলা ব্লগের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।