রসুনের উপকারিতা, অপকারিতা ও খাওয়ার নিময়

5/5 - (1 vote)

রসুনের উপকারিতা – রসুন চিনেনা এমন ব্যাক্তি হয়ত খুজে পাওয়া কঠিন। আমাদের দেশ সহ দক্ষিন এশিয়া তে রান্নার অন্যতম প্রধান একটি মশলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে রসুন।

রসুন শুধু মাত্র খাবার এর স্বাদ বৃদ্ধি করতে ব্যবহার করা হয় বিষয় টি মোটেও এমন নয়। বরং রসুন দিয়ে নানান ধরণের ভেষজ ঔষধ সহ বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে রসুন ব্যবহার করা যায়।

আজকের আর্টিকেলে রসুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো চেষ্টা করবো আপনাদের। রসুন এর উপকারিতা ও রসুন খাওয়ার নিয়ম যদি আপনি জানতে চান তাহলে আর্টিকেল টি শেষ পর্যন্ত আপনাকে পড়তে হবে।

রসুনের পরিচয়

রসুন আমরা সবাই প্রায় কম বেশি চিনি। তবুও এর পরিচয় বা ইতিহাস সম্পর্কে কিছুটা না বললেই নয়। রসুন যার বৈজ্ঞানিক নাম হলো অ্যালিয়াম স্যাটিভাম। রসুন পেয়াজের মতোই একটি ঝাঝালো মশলা।

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রসুন এর চাষ হয় নাটোর জেলায়। পুরো দেশের রসুনেত চাহিদার প্রায় ৩০ ভাগ রসুন উৎপাদন করে নাটোর জেলা। রসুনের আলাদা কোনো জাত সাধারণত হয় না,  প্রাচীন কাল থেকেই একক জাতীয় রসুনের চাষাবাদ করা হয়ে থাকে।

আশা করি রসুন সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা পেয়েছেন। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রসুন চাষ করা হয়। এই রোসন অনেকেই শুধু মাত্র রান্নার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায় এমন টা মনে করেন তবে রসুন ভেষজ ঔষধ তৈরি তে অনেক বড় ভুমিকা পালণ করে থাকে।

রসুনের উপকারিতা

রসুনের উপকারিতা

রসুন আমাদের সকলের খাওয়া উচিৎ। অনেকেই তরকারিতে রসুনের গন্ধ সহ্য করতে পারেন না। আবার অনেকেই কাচা রসুন উপকারিতার জন্য খেয়ে থাকেন। কিন্তু রসুনের উপকারিতা গুলো আসলে কি কি? সে সম্পর্কে কি আপনি জানেন?

📌 আরো পড়ুন 👇

চলুন নিচে থেকে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেই রসুনের উপকারিতা গুলো সম্পর্কে –

১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে রসুন

রসুন আমাদের শরিরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। রসুনে রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল যা শরিরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চান তাহলে খালি পেটে রসুন খেতে পারেন।

২. উচ্চ রক্ত চাপ কমাতে রসুন এর ব্যবহার

উচ্চরক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে রসুন। উচ্চ রক্ত চাপ কে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য খালি পেটে দুই কোয়া রসুন খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে রসুন।

৩. ত্বক ভালো রাখতে রসুনের উপকারিতা

ত্বক সুস্থ রাখতে ও বয়সের ছাপ না পরাতে চাইলে রসুন খেতে পারেন। রসুন ত্বক কে উজ্জিবিত রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের বিভিন্ন দাগ থাকলে তা কমাতে সাহায্য করে রসুন।

৪. হাড়ের শক্তি বাড়াতে রসুনের উপকারিতা

হাড় ক্ষয় রোধ সহ হাড় কে শক্ত করে তুলতে সাহায্য করে রসুন। বিশেষ করে,  নারীদেত ক্ষেত্রে যাদের ইস্ট্রোজেন কমে যায় তারা রসুন খেলে হাড় অনেকটা শক্ত হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। হাড় শক্ত রাখার জন্য রসুন খেতে পারেন।

৫. রক্ত পরিস্কার করতে রসুনের উপকারিতা

রক্ত পরিশোধন ছাড়াও রক্ত চলাচল সক্রিয় রাখার জন্য রসুব বিশেষ ভাবে কাজ করে থাকে। শরিরে রক্ত পরিস্কার ও চলাচল যতো বেশি ভালো থকবে শরিরে বিভিন্ন ধরণের রোগের আশংকা ও কমতে থাকবে। 

৬. ফুসফুস ভালো রাখতে রসুনেত উপকারিতা 

ফুসফুসে বিভিন্ন ধরণের সংক্রমণের কারণে জটিল সব সমস্যা দেখা যায়। বিশেষ করে,  ঠান্ডা লাগার ফলে ফুসফুসে সংক্রমন শুরু হয়। এ জন্য আপনি রসুন বেটে খেতে পারেন। তাহলে আপনার ফুসফুস সংক্রন হওয়ার আশংকা অনেকাংশে কমে যাবে।

৭. যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে রসুনের উপকারিতা

নানান কারণে বা হরমোন জনিত কারণে যৌন ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। এ ক্ষেত্রে যৌন ক্ষমতা কে বাড়াতে চাইলে রসুন খেতে পারেন। যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে রসুন অনেক ভাবে সাহায্য করে। সাধারণত রসুন রক্ত চলাচল এর ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে যার ফলে যৌন শক্তি স্বাভাবিক থাকে বা বৃদ্ধি পায় যদি কমে যায় সেক্ষেত্রে।

৮. হজমে সাহায্য করে রসুন

হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে রসুন। যদি আপনার হজম শক্তি তে সমস্যা থাকে তাহলে রসুন খেতে পারেন। এর ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।

৯. হাইপার টেনসন কমাতে সাহায্য করে রসুন

যারা অল্পতেই খুব চিন্তায় পরে যান বা হাইপার হয়ে যান তারা রসুন খেতে পারেন। অতিরিক্ত চিন্তা মানুষের শরির কে দুর্বল করে দেয়। রসুন হাইপার টেনসন কমিয়ে দিতে সাহায্য করে থাকে।

১০. চুল পাকানো কমায় রসুন

চুল পেকে যাওয়া একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এ থেকে বাচার কোনো উপায় নেই। তবে বয়স হওয়ার পূর্বেই যদি চুল পাকতে শুরু করে তাহলে রসুন খেতে পারেন। এর ফলে চুল পাকা কমতে পারে।

১১. কৃমি দূর করতে রসুন এর উপকারিতা

রসুন কৃমি নাশক হিসেবে কাজ করে থাকে। অতিরিক্ত কৃমির সমস্যা যদি থাকে তাহলে রসুন খেতে পারেন। এর ফলে অতিরিক্ত কৃমি গুলো পরে যাবে। 

উপরে দেয়া উপকারিতা গুলো হলো রসুনের মধ্যে থাকা ভেষজ গুন। যা সাধারণত রসুনের মধ্যে বিদ্যমান থাকে। তবে সকলেত ক্ষেত্রেই যে রসুন উপকারি হবে এটা মোটেও নয়। রসুন খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই এর অপকারিতা গুলো সম্পর্কেও আপনাকে জানতে হবে। নিচে আমরা রসুনের অপকারিতা গুলো দিয়ে দিলাম।

রসুনের অপকারিতা

রসুনের অপকারিতা

রসুনের যেমন উপকারিতা আছে অনেক ঠিক তেমনি রসুনের অপকারিতা গুলো মারাত্মক ক্ষতিকর। রসুন অতিরিক্ত খাওয়া থেকে সবসময় বিরত থাকার চেষ্টা করবেন। যদি আপনার শরিরে কোনো ইফেক্ট পরে তাহলে কাচা রসুন একদম এই খাবেন না। সাধারণত যে সকল অপকারিতার দিক আছে রসুনে সেগুলো হলো –

১. যকৃতে বিষক্রিয়া করতে পারে রসুন

যদি অতিরিক্ত পরিমানে রসুন খাওয়া হয় তাহলে রসুনে থাকা অ্যালিসিন উপাদান যকৃতে বিষক্রিয়া তৈরি করতে পারে। তাই রসুন খেলেও মাত্রার বাইরে কখনোই খাওয়া ঠিক হবে না। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুকি বেড়ে যায়।

২. বমি ও বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে

রসুন খাওয়ার ফলে বমি ও সাথে বুকে জ্বালাপোড়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে খালি পেটে কখনোই রসুন খাওয়া যাবে না। সাধারণত খালি পেটে রসুন খেলেই এই সমস্যা গুলো বেশি দেখা যায়। 

৩. ডায়রিয়া হতে পারে রসুন খেলে

খালি পেটে কাচা রসুন খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া হতে পারে। রসুনে সালফার উপাদান বিদ্যমান আছে যা পেটে গ্যাস তৈরি করে ও ডায়রিয়া হতে পারে। 

৪. দৃষ্টিশক্তির সমস্যা করে রসুন

অতিরিক্ত রসুন খেলে দৃষ্টি শক্তি হারাতে পারে। অতিরিক্ত রসুন খেলে হাইফিমা হতে পারে যার কারণে আইরিস ও কার্নিয়ায় রক্তক্ষরণ হওয়ার আশংকা থাকে।

৫. গর্ভবতী নারীদের জন্য রসুন অপকারিতা

গর্ভবতী নারীদের জন্য রসুন না খাওয়া ভালো হবে কারণ এতে প্রসব বেদনা বৃদ্ধি পেতে পারে। এ ক্ষেত্রে ডাক্তার এর পরামর্শ নিতে পারেন।

৬. মাথা ঘোড়ার সমস্যা তৈরি করে রসুন

রসুন রক্তচাপ কমায় যদি অতিরিক্ত রসুন খাওয়া হয় তাহলে অনেক রক্তচাপ কমার কারণে মাথা ঘোড়ার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এর জন্য কখনোই অতিরিক্ত রসুন খাওয়া যাবে না।

📌 আরো পড়ুন 👇

এ ছাড়াও এলার্জি জনিত অনেক ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে কাচা রসুন বা অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে। যদি আপনি রসুন খাওয়ার চিন্তা করে থাকেন তাহলে অবশ্যই কোনো একজন রেজিস্ট্রাড চিকিৎসক এর পরামর্শ গ্রহণ করেই নিয়মিত রসুন খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এ ছাড়া আপনি মশলা হিসেবে রসুন খেতে পারেন।

রসুনের পুস্টি উপাদান কি কি

আমরা পূর্বেই বলেছি রসুন হলো একটি পেয়াজ মশলা উদ্ভিদ এর মতো। খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করতে এটা সাহায্য করে থাকে। নিচে প্রতি ০৩ গ্রাম রসুনে যে সকল পুস্টিগুন গুলো থকে :-

  • ম্যাঙ্গানিজ – ২%
  • ভিটামিন বি ৬ – ২%
  • ভিটামি সি – ১%
  • সেলেনিয়াম – ১%
  • ফাইবার – ০.০৬ গ্রাম
  • ক্যালোরি – ৪.৫ গ্রাম
  • প্রোটিন – ০.২ গ্রাম
  • কার্বোহাইড্রেট – ০.২ গ্রাম

এই সকল পুস্টি গুন গুলো ১ কোয়া রসুনের মধ্যে পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রেই কাচা রসুন শরিরে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা তৈরি করে। এই ধরণের সমস্যা দেখা দিলে কাচা রসুন বা খালি পেটে রসুন খাওয়া পরিহার করতে হবে। 

রসুন খাওয়ার নিয়ম

রসুন সাধারণত আমরা মশলা হিসেবে বেশি খেয়ে থাকি। কিন্তু কাচা রসুন খেতে পারলে যদি শরিরে কোনো সমস্যা না দেখা যায়। তাহলে মাত্রা পরিমাণ রসুন খেলে অনেক ধরণের উপকারিতা পাওয়া যায়। যা আমরা উপরে রসুনের উপকারিতা অংশে ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি।

কাচা রসুন অনেক ভাবে খাওয়া যায় আবার রসুন ভেজে সাথে হলুদের গুড়া মিশিয়ে খাওয়া যায়। এর ফলে পেটের কৃমি বেশি হলে সেটা কমতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও যে সকল পদ্ধতি তে আপনি রসুন খেতে পারেন। সেগুলো হলো –

  • সকালে একদম খালি পেটে ১ অথবা ২ কোয়া রসুন ছাড়িয়ে নিন। এবার রসুন গুলো ভালো ভাবে চিবিয়ে খেয়ে নিন। এইভাবে রসুন খেলে ভালো উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে কখনোই বেশি খাওয়া যাবে না। তাহলে মৃত্যু ও ঘটতে পারে।
  • রসুন বিভিন্ন ভাজা পোড়ার সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। যদি আপনি ভাজাপোড়া খাওয়াত অভ্যাস্ত হোন তাহলে তার সাথে এক বা দুই কোয়া রসুন চিবিয়ে খেতে পারেন।
  • কাচা আমলকির রসের সাথে এক কোয়া পরিমান রসুন খেতে পারেন। এতে শরিরে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায় বলেই ধরা হয়ে থাকে। 
  • এক বা দুই কোয়া কাচা রসুন বেটে রস বের করে সেটা খেতে পারেন। এতে পেটের কৃমিনাশক হিসেবে ভেষজ এত মতোই কাজ করবে।

এ ছাড়াও আপনি বিভিন্ন ভাবেই রসুন খেতে পারেন। তবে মনে রাখবেন এটাই যে কখনোই এক বা দুই কোয়ার বেশি রসুন খাওয়া যাবে না। তাহলে নানান ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি খালি পেটে রসুন খাওয়ার পরে বুকে  জ্বালাপোড়া হয় তাহলে আপনাকে খালি পেটে রসুন খাওয়া বাদ দিয়ে দিতে হবে।

📌 আরো পড়ুন 👇

প্রতিদিন যদি রসুন খাওয়ার অভ্যাস করতে চান তাহলে ডাক্তার এর পরামর্শ নিন। এ ছাড়া আপনি কিছুদিন পর পর বিরতি নিয়ে রসুন খেতে পারেন, এতে আপনার স্বাস্থ্যের অনেক উন্নতি হবে।

ভাতের সাথে রসুন খেলে কি হয়

অনেকেই ভাতের সাথে রসুন মিলিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করেন। রসুন একভাবে আসলে খেলেই হয়। রসুন খাওয়ার জন্য নিয়ম বলতে গেলে শুধু এটাই যে ২ কোয়ার বেশি মোটেও নয়। সাধারণত ভাতের সাথে রসুন খেলেও সকল উপকারিতা এই পাওয়া যায়। রসুন খাওয়ার ফলে আমাদের শরিরে রক্ত তরল করতে সাহায্য করে। 

পাশাপাশি শরিরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। ফুলা বা ব্যাথা অনেকটা কমিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে। ঠান্ডা ও সর্দির ক্ষেত্রে প্রকৃতিক এন্টিবায়োটিক এর মতোই কাজ করে।

ইসলামের দৃষ্টিতে রসুন খাওয়ার নিয়ম

ইসলামের দৃষ্টিতে কাচা রসুন ও পেয়াজ খেয়ে মসজিদে যেতে বারণ করা হয়েছে। কারণ হলো রসুন ও পেয়াজ থেকে ঝাঝালো এক ধরণের বাজে গন্ধ আসে। তবে অনেকেই চিন্তায় পরে যান যে,  কাচা রসুন খাওয়া কি তবে হালাল নাকি হারাম? 

আসলে কাচা রসুন একটু হালাল খাদ্য। এটা আপনি খেতে পারেন। তবে,  আপনি যদি কাচা রসুন খেয়ে মসজিদে জামায়াত এ নামাজ পরতে যান তাহলে অন্যদের এই গন্ধের কারণে সমস্যা হতে পারে।

এ বিষয়ে রাসূল (সা) বলেন – “যদি তোমরা খেতেই চাও, তাহলে রান্নার মাধ্যমে এ দুটি কে মেরে ফেল” 

অর্থ্যাৎ রান্নার মাধ্যমে পেয়াজ ও রসুন খাওয়া যাবে। তবে কাচা ও খাওয়া যাবে তবে সেটা মসজিদে যাওয়ার পূর্বে খাওয়া যাবে না। সাধারণত যে কোনো ধরণের মুখে গন্ধ নিয়ে মসজিদে যাওয়া উত্তম নয়। তাহলে অন্যদের সমস্যা হয়।

মধুর সাথে রসুন খাওয়ার নিয়ম

মধু স্বাস্থ্য সুস্থ রাখার জন্য অনেক উপকারি। যা আমাদের স্বাস্থ্য কে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। মধুর সাথে রসুন মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে রসুন এর গুনাগুন এর পাশাপাশি মধুর উপকারিতা গুলো পাবেন। দুটো গুনাগুন এক সাথে পাওয়ার জন্য অনেকেই মধুর সাথে রসুন খেতে পছন্দ করে। 

মধুর সাথে রসুন খাওয়ার জন্য ২ কোয়া রসুন একটা ছোট কাপ বা বাটিতে কুচি কুচি করে কেটে নিন। এবার এর সাথে এক চামচ মধু মিশ্রণ করে খেয়ে নিন। এভাবে আপনি খালি পেটে বা ভরা পেটে ও খেতে পারেন। এতে অনেক ধরণের উপকারিতা শরিরে পাওয়া যায়।

রাতে রসুন খেলে কি হয়

রাতে, দিনে বা সকালে যে কোনো সময়েই রোসন খেলে রোসন এর সকল উপকারিতা পাওয়া যায়। তাই শুধুমাত্র রাতেই যে রোসন খেলে উপকারিতা পাওয়া যাবে এমন কোনো ব্যাপার নেই।

তবে রাতে এজম্যা,  কফ ও নিউমিনিয়ার রোগীরা ঘুমানোর আগে রোসন খেতে পারেন। মধু অথবা দুধের সাথে দুই কোয়া রসুন মিলিয়ে খাওয়ার ফলে এ সমস্যা গুলোর জন্য অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়।

রসুন সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নউত্তর

প্রতিদিন কতটুকু রসুন খাওয়া উচিৎ? 

প্রতিদিন আপনি খুব বেশি হলে দুই কোয়া রসুন খেতে পারেন। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি ১ কোয়া পরিমান রসুন খান।

রসুন খেলে কি এলার্জি হয়?

রসুন যদি বেশি পরিমানে খান তাহলে এলার্জি এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। কম খাওয়ার পরে অনেকের এলার্জি দেখা যায় তবে আপনার শরিরের উপর এটা নির্ভর করে। সাধারণত মাত্রা পরিমাণ রসুন খেলে এলার্জির সমস্যা দেখা যায় না।

রসুনের ইংরেজি কি?

রসুন শব্দটি হলো বাংলা। ইংরেজি ভাষায় রসুন কে বলা হয় – Of Garlic.

খালি পেটে রসুন খেলে কি ক্ষতি হয়?

খালি পেটে মাত্রা পরিমান রসুন খাওয়ার ফলে সাধারণত কোনো সমস্যা দেখা যায় না। তবে বুকে জ্বালাপোড়া ও গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রসুন খেলে কি বীর্য ঘন হয়?

চিকিৎসা বিজ্ঞানে রসুন একটি ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে পরিচিত। রসুন খেলে বীর্য ঘন ও যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়।

কাচা রসুন খাওয়া কি জায়েজ?

হুম জায়েজ। তবে কাচা রসুন খাওয়ার পরে মসজিদে যাবেন না। মসজিদে যাওয়ার পূর্বে গন্ধ দূর করেই তবে যাবেন।

রসুন সম্পর্কে আমাদের মতামত 

রসুনের উপকারিতা আর্টিকেলে আমরা রসুনের সকল উপকারিতা ও অপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। রসুন অতিরিক্ত কখনোই খাবেন না, মনে রাখবেন এটা আপনার যকৃতে বিষক্রিয়া পর্যন্ত করতে পারে। সাধারণত রসুনের পরিমান হলো সর্বোচ্চ ২ কোয়া খাওয়া। 

তাই আপনি যদি সুস্থ ভাবে রসুন খেতে চান তাহলে ১ কোয়া পর্যন্ত রসুন আপনার জন্য খাওয়া উচিৎ হবে। এ ছাড়াও কাচা রসুন খাওয়ার পরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। কোনো ধরনের জটিল সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তার এর পরামর্শ ছাড়া নিয়মিয় কাচা রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

এসব বিষয় যদি বুঝতে অসুবিধা হয় অথবা কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে কমেন্ট করতে পারেন। এতক্ষন প্রযুক্তির বাংলা ব্লগের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

পোষ্টটি শেয়ার করুন

Leave a Comment